:: এম.আর মাহমুদ ::
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত হঠাৎ করে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। যার বিরূপ প্রভাবে এক লাফে পিয়াজের কেজি ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজ আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। তবে উৎপাদিত পিয়াজ নিয়ে দেশীয় চাহিদা মেটাতে পারে না বলে বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। দেশের চাহিদা মেটাতে ভারত মিয়ানমার সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে পিয়াজ আমদানী করলেও বেশিরভাগ পিয়াজ আমদানি হয়ে থাকে ভারত থেকে। বেশ ক’মাস ধরে পিয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠলেও অনেকটা সহনীয় মাত্রায় ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় পিয়াজের ঝাঁজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আশার বাণী শুনিয়েছিল, পিয়াজের সংকট হবে না। অবশ্যই সামান্য পরিমাণে পিয়াজ টি.সি.বি ঢাকা মহানগর এলাকায় ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করছে। আমাদের সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা উপলক্ষে ভারত সরকারকে ৫‘শ টন ইলিশ উপহার হিসেবে প্রদান করেছে। সরকার মনে করছিল, দূর্গা পূজা উপলক্ষে ভারতকে উপহার হিসেবে ৫‘শ টন ইলিশ প্রদান করে তাদের মন জয় করবে। কিন্তু বিধি বাম ইলিশের চালান পৌঁছার পর পরই পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। ফলে দেশে সৃষ্টি হয়েছে পিয়াজ সংকট। অনেকেরই অভিমত, বাংলাদেশ থেকে উপহার হিসেবে ভারতকে দেয়া ইলিশ মাছগুলো রান্না করতে কম করে হলেও সে দেশের ১০০ টন পিয়াজ মাছ রান্নায় ব্যবহার করতে হবে। সে কারণেই পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। পিয়াজ না হলে সুস্বাদু খাবার তৈরিতে বেশ একটা সমস্যা হবে এমন চিন্তা করার কোন যুক্তি নেই। তারপরও পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে রন্ধন সামগ্রী তৈরী করতে পিয়াজ ব্যবহার করে আসছে বলে পিয়াজের চাহিদা রয়েছে। আমাদের সরকার ৫‘শ টন ইলিশ ভারত সরকারকে উপহার দিলেও ভারত সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষা না করে আমাদের স্বার্থ রক্ষা করবে এমন চিন্তা করার কোন যুক্তি নেই। পিয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ও ভারত কর্তৃক পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করা প্রসঙ্গে এক ভদ্র লোক বলে বসলেন, “মন দিয়ে তো বসে আছি, পিয়াজ দিয়ে লাভটা কি?”। মূলতঃ তিনি ব্যাঙ্গার্তক ভাবে মন্তব্যটি করলে পুরানো একটি ঘটনা মনে পড়েছে ‘দেশের একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী তার নাম মকিম গাজী, তার স্বভাব চরিত্র কেমন ছিল বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। কারণ, খুন, ডাকাতি থেকে শুরু করে সব কু-কর্মে সে ছিল পারদর্শী। সময় পেলেই মাতাল অবস্থায় ছুটে যেতেন পতিতা পল্লীতে। সেখানে গিয়ে যে পতিতার সাথে রাত কাটাতেন তাকেই বলতেন তুমি খুব সুন্দরী, আমি তোমাকে বিয়ে করব। এভাবেই আশ্বাস দিয়ে কু-কাম সেরে চলে যেতেন। সব পতিতা পল্লীর সব বাসিন্দারাই জানত, তার এ ধরনের সরল উক্তির কথা। একদিন এক পতিতা মকিম গাজীকে বলে বসলেন, তুমি যে আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রতিবারই চলে যাও, এইবার দেখি তুমি যে আমাকে বিয়ে করবে তা বিশ্বাস জন্মানোর জন্য হাতের আংটিটা দিয়ে যাও; তখন মকিম গাজী মাতাল অবস্থায় মাথা নেড়ে বলে বসলেন “মন দিয়ে তো বসে আছি আংটি দিয়ে লাভটা কি”। শুধু পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত আমাদের পিয়াজের বাজারে আগুন লাগায়নি। ফারাক্কার সব ক’টি গেইট খুলে দিয়ে বন্যার পানিতে ডুবিয়ে মারার কৌশলও নিয়েছে। অথচ যখন আমাদের দেশের জনগণ পানির জন্য আর্তনাদ করে তখন এক ফোটা পানি দিতেও রাজী হয়না। অথচ যখন আমাদের পানির প্রয়োজন হয়না তখন পানি দিয়ে আমাদেরকে পানি দিয়ে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। কাষ্মীরের স্বাধীনতার বিপক্ষে বাংলাদেশ ভোট দিলেও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভারত ভোট দেয়নি, অতএব মন্তব্য নি®প্রয়োজন।
লেখক : এম আর মাহমুদ, একজন সংবাদ লেখক ও গবেষক
সভাপতি -চকরিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব, চকরিয়া, কক্সবাজার।
পাঠকের মতামত: